কেউ কথা রাখেনি, না মেসি না ডি মারিয়া, বত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি
ছেলেবেলায় বাবা টিভি হঠাৎ ভেঙ্গে ফেলে বলেছিল
আবার যেদিন আর্জেন্টিনা কাপ নেবে সেদিন টিভি কিনবো
তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা চলে গেলো, কিন্তু সেই আমাদের
টিভি কেনা আর হল না
পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় আছি।
মামা বাড়ির মাঝি নাদের আলী বলেছিল, বড় হও দাদাঠাকুর
একদিন আর্জেন্টিনা ঠিক কাপ পাবে
সে কাপের সোনা খুব চকচকে হবে
নাদের আলী, আমি আর কত বড় হবো? আমার মাথা এ ঘরের ছাদ
ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করলে তারপর তুমি আমায়
আর্জেন্টিনার কাপ দেখাবে?
একটাও কাপ ও জিততে পারিনি ছিয়াশির পরে কখনো
ব্রাজিলের কাপের ছবি দেখিয়ে দেখিয়ে হেসেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা
ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি
ভিতরে ব্রাজিলের জয় উৎসব
অবিরল রঙের ধারার মধ্যে সুবর্ণ কঙ্কণ পরা ফর্সা রমণীরা
কত রকম আমোদে হেসেছে
আমার দিকে তারা ফিরেও চায়নি!
বাবা আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিলেন, দেখিস, একদিন, আমরাও…
বাবা এখন অন্ধ, আমাদের দেখা হয়নি কিছুই
সেই ছিয়াশির বিশ্বকাপ, সেই হ্যান্ড অব গড, সেই জয় উৎসব
আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবেনা!
বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুণা বলেছিল,
যেদিন আর্জেন্টিনা সত্যিকারের কাপ পাবে
সেদিন আমার বুকেও এ-রকম আতরের গন্ধ হবে!
কাপ জেতানোর জন্য আমি ফেসবুকে কতো আবোল তাবোল লিখেছি
মেসিকে নিয়ে এসেছি ভিনগ্রহ থেকে
হাত দিয়ে গোল দেয়া ও শিখিয়েছি
তবু কাপ জেতেনি আর্জেন্টিনা, এখন বরুনার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ
এখনো সে যে-কোনো নারী
কারন আর্জেন্টিনা এখনো কাপ জেতেনি
কেউ কথা রাখেনি, বত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখে না!
বি.দ্রঃ মজা করার জন্য সুনীল বাবুর “কেউ কথা রাখেনি” কবিতার প্যারোডি বানালাম। কাউকে আঘাত দেয়ার ইচ্ছে নেই, একদম বরুনার কসম দিয়ে বলছি। কেউ আঘাত পেলে সারজিও রামোস এর দোষ।