Carl Panzram- ইতিহাসের অন্যতম স্যাডিস্ট সিরিয়াল কিলার!

Carl Panzram বলেছিল I hate the whole damned human race including myself. এ কারনে তিনি প্রায় ২১ টি মার্ডার করেন। সাথে প্রায় ১০০০ জন কে ধর্ষণ করেছিলেন যাদের সবাই সবাই হয় কিশোর বালক অথবা পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ ছিল। ১৮৯১ সালে অ্যামেরিকার মিনাসোটা অঙ্গরাজ্যে জন্মগ্রহন করা Panzram কে ধরা হয় ইতিহাসের সবথেকে স্যাডিস্টিক সিরিয়াল কিলার। কিন্তু কেন?

Panzram এর সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠার পেছনে একটা অন্ধকার অতীত আছে। ছোট বেলায় তার বাবা তাদের ছেঁড়ে চলে যায়, তখন Panzram এর বয়স ৮। এর কিছুদিন পর চুরি করার দায়ে তাকে একটি শোধনাগারে পাঠানো হয়, যেখানে তাকে রাখা হয় অনেক ধর্ষক, চোর, জোচ্চোরদের সাথে যা তার উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে। তখন থেকেই তার মধ্যে স্যাডিজম কাজ করতে শুরু করে। এরপর মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাকে গাং রেপ করে একদল গৃহহীন ভবঘুরে। Panzram বলেছেন এই ঘটনা তাকে দুঃখী ও অসুস্থ করে তোলে সাথে সাথে জীবনকে চিনতে শেখায়।

১৯১৫ সালে Panzram কলোম্বিয়া রিভার ধরে আগাতে থাকে। ক্যালিফোর্নিয়া সহ বেশ কিছু শহরে নিজের ছাপ ফেলতে থাকে। এই সময়ে সে প্রচুর বাড়িতে সিধ কেটে চুরি করতে থাকে ও প্রচুর কিশোর বালক কে ধর্ষণ করে নিজের ক্ষোভ মেটাতে থাকে। এসময় অরিগন স্টেট এ সিধ কেটে চুরি করতে যেয়ে ধরা পরে যায় Panzram। তার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়। এখানে তার উপর নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন যা তাকে আরো স্যাডিস্ট করে তোলে।

১৯১৮ সালে Panzram জেল থেকে পালিয়ে যায়। এরপর সে তার জীবনের প্রথম খুন করে। সে নিউ ইয়র্ক এ এসে চুরি করা টাকা দিয়ে একটা ইয়ট কেনে। এরপর ১০ জন নাবিক ভাড়া করে সাগরে চলে যায়। সেখানে তাদের মদ খাইয়ে ঘুম পড়িয়ে Panzram এই ১০ জনকেই গুলি করে মেরে ফেলে। এরপর সে চলে যায় অ্যাঙ্গোলা।

১৯২০ সালে Panzram অ্যাঙ্গোলাতে ৬ জন লোকাল গাইড ভাড়া করে কুমির শিকারের জন্য। কিন্তু Panzram এর মাথায় তখন অন্য চিন্তা। বেশ দূর গিয়ে Panzram সবাইকে গুলি করে হত্যা করে কুমিরদের খাবারে পরিনত করে দেয়। এরপর যখন Panzram বুঝতে পারে আফ্রিকা আর তার জন্য নিরাপদ না তখন আবার অ্যামেরিকায় পাড়ি জমায়।

১৯২৮ সালে Panzram কে ওয়াশিংটন এ গ্রেফতার করা হয় একের পর এক সিধ কেটে চুরি করার দায়ে। আবার জেল থেকে পালাতে চেষ্টা করে Panzram, কিন্তু এবার জেলখানার ওয়ার্ডেন এর হাতে ধরা পরে যায়। এবার তার হাতে হাতকরা পড়িয়ে দেওয়া হয় ও চলে অকথ্য নির্যাতন। এই নির্যাতন দেখে তার প্রতি মায়া হয় Henry Lesser নামক এক ২৬ বছর বয়স্ক কারারক্ষীর। সে তাকে এক ডলার দেয় কিছু খাবার ও সিগারেট কিনে খাওয়ার জন্য। এর আগে কেউ তাকে এতটুকু মায়াও দেখায়নি। এরপর তারা দুজন বন্ধু হয়ে ওঠে। Henry Lesser প্রতিদিন Panzram কে পেন্সিল ও কয়েকটা করে কাগজ সরবরাহ করতো এবং তাকে উৎসাহিত করতো নিজের কাহিনী লেখার জন্য।

২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল Panzram এর। ক্যানসাস জেলে থাকা অবস্থায় Panzram এক ধোপা কে লোহার বার দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করে। তবে এটাকে অনেকটা আত্মহত্যাই বলেছেন ক্রিমিনোলজি বিশেষজ্ঞরা, কারন সে ভালো করেই জানতো এটা তার মৃত্যুদণ্ড ত্বরান্বিত করবে।

১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় Panzram চিৎকার করে বলে- “Hurry it up, you Hoosier bastard! “I could kill 10 men while you’re fooling around!”

Henry Lesser অবশ্য Panzram এর লেখা আত্মজীবনী সংগ্রহ করে রেখেছিল। কিন্তু সেটা ছাপানোর মতো সাহস কেও করছিলো না, কারন এটা সমাজে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে প্রকাশকদের ধারনা ছিল। অবশেষে ১৯৭০ সালে Killer: A Journal of Murder নামে এটি পুস্তক আকারে প্রকাশিত হয়। এই বই এর প্রচ্ছদ শিল্পী Joe Coleman বলেছেন “The guy was really quite an amazing writer,”

১৯৯৫ সালে Tim Metcalfe তাকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করেন Killer: A Journal of Murder নামে। সেখানে James Woods অভিনয় করেন Panzram এর চরিত্রে।

John Borowski ২০১২ সালে Carl Panzram: The Spirit of Hatred and Vengeance নামে একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেন। Borowski মনে করেন Panzram এর অটোবায়োগ্রাফি অপরাধ বিজ্ঞানীদের Panzram এর মতো এমন সিরিয়াল কিলারদের মানসিক অবস্থা বুঝতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়া তিনি আরো বলেন- “He tries to teach our future generations not to create more monsters like him,”