জন উপ্চুর্চ এর “ম্যাঙ্গো ড্রিমস”।

একজন শিখ ডাক্তার আর একজন মুসলিম অটো রিকশা চালক, দুজনের মধ্যে এক অন্যরকম বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার গল্প “ম্যাঙ্গো ড্রিমস“। ডিমেন্সিয়া (ধীরে ধীরে স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলা) রোগে ভুগছে বৃদ্ধ ডাক্তার অমিত। স্ত্রী গত হয়েছে বেশ কয়েকবছর আগে। একমাত্র ছেলে আভি থাকে আমেরিকায় তাঁর বিদেশিনী স্ত্রীকে নিয়ে। বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে এসেছে, ইচ্ছে বাবাকে একটা ওল্ড হোম এ রেখে যাবে, কারন ডাক্তার অমিতের পাসপোর্ট নেই। সব প্রসেস করে বাবাকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে সময় লাগবে, সে পর্যন্ত ওল্ড হোমে পরিচর্যায় থাকবে বাবা।

বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরে ডাক্তার অমিত। ওল্ড হোম এর কারাগার না, ইচ্ছে নিজের জন্মস্থানের মাটি ছুয়ে দেখবে। বাস স্ট্যান্ডে দেখা অটো রিকশা চালক সেলিমের সাথে। সেলিমের বাচ্চার যখন ডেঙ্গু হয়েছিল তখন ডাক্তার অমিত দুইদিন ধরে পরিচর্যা করে বাচিয়ে তুলেছিল তাকে। একটা টাকাও নেয় নি বিনিময়ে। সেই ঋণ রয়েছে সেলিমের। সে কথা দেয় ডাক্তার কে পৌঁছে দেবে। কিন্তু ডাক্তার যে যাবে ভারতের এমাথা থেকে ওমাথায় প্রায় তা তো আর জানতো না সেলিম।

সেলিম নামাজ পড়তো রাস্তার পাশে রিকশা দার করিয়ে। ডাক্তার অমিত জিজ্ঞেস করলে ক্ষোভ প্রকাশ করে সেলিম। হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায় সেলিমের এলাকার মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছিল হিন্দুরা, সেলিমের প্রিয়তমা স্ত্রীকে গ্যাং রেপ করেছিল। সেলিম পরে জানতে পারে ডাক্তার অমিতের ও আছে এক ভয়ঙ্কর অতীত। পার্টিশনের দাঙ্গায় মুসলিমরা মেরে ফেলেছিল তাঁর বাবাকে, গ্যাং রেপ এর শিকার হয়েছিল তাঁর বোন। সে মানুষ হয়েছে এক এতিমখানায়।

দুজনের দুজনের প্রতি এক ভালবাসার, শ্রদ্ধার বন্ধন তৈরি হয়ে যায়। দুজনে এক অটো রিকশা নিয়ে ছুটে চলে হাজার মাইল।

গল্পটা দারুন, হৃদয় ছুয়ে দেয়। উপস্থাপনাও দারুন। কিন্তু মুভিটা বিরক্তিকর ও। কারন ইংরেজি উচ্চারন। মুভিটা যদি হিন্দিতে হতো তাহলে দারুন হতো। কিন্তু ইংরেজি ভাষায় বানাতে যেয়ে ডিরেক্টর অভিনেতাদের ভারতীয় ইংরেজি উচ্চারন থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেননি। তবে এটুকু যদি ওভারলুক করে যেতে পারেন মুভিটা বেশ ভাল।

মুভিঃ ম্যাঙ্গো ড্রিমস
পরিচালকঃ জন উপ্চুর্চ
কাস্টিংঃ রাম গোপাল বাজাজ, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, নাসিরুদ্দিন শাহ (গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স)
আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.৫

মুভি ট্রেলারঃ